পাচারকারী মিন্টু, ভদু ও আশানুরের ভয়ংকর ফাঁদ বোম্বের নিষিদ্ধ পল্লীতে ঝিকরগাছার এক নারীকে বিক্রি দেশে ফেরার আকুতি

প্রতিদিন বাংলাদেশ নি্উজ 24
0
ইনছান আলী স্টাফ রিপোর্টার, ৩৫ বছর বয়সী বানু বেগম (ছদ্মনাম) ঝিকরগাছার গুলবাপপুর গ্রামের বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। স্বামী রহমতুল্লাহ ১০ বছর আগে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘনায় মারা যান। শিশু দুই সন্তান নিয়ে পানিতে পড়েন বানু বেগম। এভাবেই কেটে যাচ্ছিল তার সংসার। এরমধ্যে চৌগাছার সুকপুকুরিয়া ইউনিয়ানের ছোট আন্দুলিয়া গ্রামের মিন্টু ও ভদু দালালের সঙ্গে পরিচয় হয় বানু বেগমের। তারা ভারতে বেশি বেতনে কাজ করার প্রলোভন দেখায়। তাদের সরল সোজা কথায় রাজি হয় বানু বেগম। ১১ বছরের শিশু সন্তান আবদুল্লাহ রহমান লিটনকে সঙ্গে নিয়ে গত ১৮ জুলাই বাগান পথে পাড়ি জমায় ভারতে। দালালরা বলেছিল সীমান্তের কাছাকাছি তার চাকরী হবে। কিন্তু বানুকে নিয়ে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় বোম্বের নিষিদ্ধ পল্লীর সর্র্দারানী দিপার কাছে। শুরু হয় অমানবিক জীবন। প্রতি রাতে ৫/৬ জন খদ্দেরকে মনোরঞ্জন করতে হতো বানু বেগমকে। রাজি না হলে এসিড মেরে ঝলসে দেবার হুমকী দিত দিপা। বানুর মতো ওই নিষিদ্ধ পল্লীতে যশোর অঞ্চলের আরো ৫/৬জন নারী রয়েছে। তাদের শরীর এসিডে পোড়া। বয়স কম হওয়ায় তারা প্রতিরাতে ৫/৬জন পুরুষকে মনোরঞ্জন করতে পারতো না। অপরাগ হলেই নেমে আসতো ভয়াবহ নির্যাতন। ৫৪ দিনের মাথায় বানু বেগম পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। তিনি এখন ভারতের উড়িষ্যা শহরে অজ্ঞাত স্থানে আরেক বাংলাদেশীর কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে তার ১১ বছরের শিশু সন্তান আবদুল্লাহ রহমান লিটনকে আটকে রেখেছে সর্র্দারানী দিপা। মঙ্গলবার দুপুরে এ প্রতিনিধির সঙ্গে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কথা হয় বানু বেগমের। তিনি একটি ভিডিও বার্তাও তৈরী করে পাঠান। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তিনি অভিযোগ করেন, দিপা মুসলিম। তার বাড়ি যশোর সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। তার ছেলের নাম হৃদয়। দিপার ভাই আশানুর বাংলাদেশ থেকে এ ভাবে নারীদেরকে ভারতে পাচার করে চড়া দামে বিক্রি করে। এই চক্রের শিকার হয়েছি আমি। বানু বেগমের ভাষ্যমতে বোম্বের নিষিদ্ধি পল্লীতে আরো ৪/৫জন বন্দি আছে। তাদেরও তিনি উদ্ধারের দাবী জানিয়ে এই ক্রের সঙ্গে জড়িত মিন্টু, ভদু ও আশানুর দালালের বিচার দাবী করেন। এ ব্যাপারে ঝিকরগাছার গংগানন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি খোঁ খবর নিয়ে জানাতে পারবো। স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বর মহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানান পর আমি পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তিনি বলেন আমার এলাকায় মিন্টু ও ভদু নামে একাধিক ব্যক্তি আছে। তবে তাদের মধ্যে কেউ মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত কিনা বলতে পারবো না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)